সামিউল আলীম (বগুড়া জেলা) প্রতিনিধিঃ বগুড়া শহরের নিশিন্দারা মধ্যপাড়া এলাকায় গত ১৯ অক্টোবর বাড়িতে ঢুকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাছলিমা (২৩)নামে এক গৃহবধূ হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। আজ (শনিবার ) জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই হত্যার রহস্য উদঘাটনের কথা বলা হয়।এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর মামলা দায়ের হলে বগুড়া জেলা পুলিশ চৌকস অভিযান চালায় এবং সিসি টিভি ফুটেজ দেখে একজন কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। গ্রেফতারকৃত একমাত্র আসামি হলেন শাকিব(২৩) পিতাঃ আনিছার রহমান,সাং রাজাপুর, বগুড়া সদর, বগুড়া।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী শাকিব উদ্দিন জানায় যে, গত ১৯/১০/২০২৩ খ্রি. তারিখ সে ইজিবাইক নিয়ে বাহির হয়ে ভাড়া নিয়ে নিশিন্দারা পৌঁছালে তার ইজিবাইকের পিছনে একটি অটো রিক্সা ধাক্কা মারে ফলে তার ইজিবাইকের পিছনের বামের চাকার মাডগার্ড বেঁকে যায়। তাই সে চাকাটি ঠিক করার জন্য সে তার প্রতিবেশী চাচাতো বোন তাছলিমার বাড়ির সামনে নিয়ে যায়। তারপর প্রতিবেশী চাচাতো বোনকে ডাকে এবং বোনকে বলে তার গাড়িটার বামের চাকার মাডগার্ড বেঁকে যাওয়ার কারণে চাকা আর ঘুরতেছে না তার বাসায় কোন হাতুরী আছে কিনা? তখন তাছলিমা তাকে জানায় আছে বলে কিছুক্ষণ পরে হাতুরী নিয়ে এসে তাকে দেওয়ার পর সে হাতুরী নিয়ে গাড়ির চাকার মাডগার্ড ঠিক করে। তারপর হাতুরী আবার তাছলিমা কে দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় কিছুদূর যেতেই চাকার মাডগার্ডটি আবার বেকে যায়। পরে সে ইজি বাইকটা সেখানেই রেখে আবার তাসলিমা এর বাড়িতে হাতুরী নেওয়ার জন্য যায় এবং হাতুরী নিয়ে গিয়ে পুনরায় গাড়িটি ঠিক করে হাতুরী দেওয়ার জন্য তাছলিমার বাড়িতে যায় এবং হাতুরীটি তার হাতে দেয়। তাছলিমা হাতুরীটি নিয়ে পাশেই সোফার উপর রেখে দেয় এবং তাছলিমা তাকে খিচুরী খাওয়ার কথা বললে পেটে সমস্য বলে খিচুরী খায় না। তখন তার জন্য বিস্কুট আনতে যায় এই ফাকে সে টয়লেটে যায় এবং টয়লেট থেকে এসে দেখতে পায় তার জন্য বিস্কুট এনে সোফায় রেখে দিয়েছে। তখন ধৃত আসামী সোফায় বসে বিস্কুট খাওয়ার সময় আসামীর নিকট হতে পূর্বের পাওনা ১০,০০০/-(দশ হাজার) টাকা চায়। তখন আসামী শাকিব তাছলিমাকে বলে তার কাছে এই মূহুর্তে কোন টাকা নাই লোন তোলার জন্য চেষ্টা করতেছে লোন পাইলে তার টাকা পরিশোধ করে দিবে। তখন উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি হতে থাকে একপর্যায়ে আসামী শাকিব সোফায় থাকা হাতুরী নিয়ে তাছলিমাকে আঘাত করতে গেলে আঘাতটি তার পাশে থাকা তার তিন বছরের ছেলে কাজিমের মাথায় লাগে এবং মাথা ফেটে যায়। তখন উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির একপর্যায়ে আসামী শাকিব ক্ষিপ্ত হয়ে হাতুরী দিয়ে সজোড়ে তাছলিমার এর মাথায় ৪/৫ টা আঘাত করে। আঘাতের একপর্যায়ে তাছলিমা মেঝেতে লুটিয়ে পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আসামী তাছলিমার ছেলে কাজিমকে তাছলিমার মাথার কাছে বসিয়ে রেখে পাশেই থাকা ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন নিয়ে বাসা হতে বের হয়ে ইজিবাইক নিয়ে চলে যায়।
উক্ত ঘটনা সংক্রান্ত আজ শনিবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সম্মানিত পুলিশ সুপার বগুড়া জনাব সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বিপিএম, পিপিএম মহোদয় প্রেস ব্রিফিং করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।